শুক্রবার, নভেম্বর ০৭, ২০১৪

সাইলো' SAYLO ( খাদ্য শষ্য সংরক্ষনাগার ) সান্তাহার এর তথ্য বলছি।

সংকটময় মুহূর্ত বা ক্রাইসিস পিরিয়ড অতিক্রমকরার চেষ্টা মানুষের একটা চিরন্তনী ভাবনা। সেই ভাবনা থেকেই মানুষ সঞ্চয় করার অভিনব কৌশল আবিস্কার করেছে আদিম যুগ থেকেই। সেই রকম প্রচেষ্টারর আধুনিকতম রূপ অবিভক্ত পাকিস্তানী আমলে মূলত গম সংরক্ষনের জন্য ১৯৬৫ সালে সান্তাহারে এই খাদ্য শষ্য রক্ষনাগার ' সাইলো ' নির্মিত হয়।
ধারনক্ষমতা ঃ ২৫০০০ মেট্রিকটন( নরম্যাল)

এ্যাকচুয়াল ক্যাপাসিটিঃ ২৫.১৫০ মেট্রিকটন।
সার্কুলার বিনের ডায়ামিটার ঃ ২০ ফুট।
বিনের উচ্চতা ঃ ১৮০ ফুট।
ষ্টোরেজ বিন ২৬ টি। স্টার বিন ১১ টি। হাফ স্টার বিন ৪ টি। হেড হাউস বিন ১১ টি।
হেড হাউস বিনের আকৃতি ৩৪ ফুট বাই ৩৬ ফুট। হেড হাউস বিনের উচ্চতা ২১২ ফুট। এর গভীরতা ২০ ফুট।
রেলওয়ে ওয়াগন আনলোডিং ষ্টেশন ৩ টি।
মেইন বুকেট এলিভেটর ( ক্যাপাসিটি ২০০ টন প্রতি ঘন্টা) ২ টা।
টি টি বুকেট এলিভেটর ২ টা।
বেসমেন্ট চেইন কনভয়র ৩ টি, রিসিভিং চেইন কনভয়র সহ, ২০০ মেঃ টন প্রতি ঘন্টায়।
হপার স্কেল ঃ ২ টা
ট্রাক স্কেল ঃ ১ টা
ডিস্ট্রিবিটর বেল্ট কনভয়র, ট্রিপার সহ ২ টি। ২০০ মেঃ টঃ প্রতি ঘন্টায়।
কেমিক্যাল প্রোটেকট্যান্ট স্প্রে ২ টা।
স্পেশাল fumigating বিন ২ টা। গ্রেইন ক্লিনার ১ টা। টেম্পারেচার ইনডিকেশান সিস্টেম ১ টা। ডাস্ট কালেক্টটিং ৪ টা। ব্যাগিং স্কেল এন্ড সুইং ৩ টা। ট্রাক লোডিং ষ্টেশন ২ ও রেল ১ টা। ট্রাক লোডিং bulk গ্রেইন ২ টা ও রেল ২ টা। ব্যাগ কনভয়র সিস্টেম ৩ টা। ইলেকট্রিক সাব ষ্টেশন ১ টা। বিন ডেকের উচ্চতা ১২ ফুট। ব্যাগিং হাউসের উচ্চতা ৬১ ফুট। কনিকাল ষ্টেশনের উচ্চতা ২.৬ ফুট।
মূল ভবন নির্মাণ কাল ১৯৬৭-৭০ পর্যন্ত।
লোক বল ( মূল) ১২৩ জন।
এর পার্শেই আরো একটি চাউলের সাইলো যা এশিয়াতে প্রথম তা নির্মাণের শেষ পর্যায়ে যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জাইকা, সেটা নিয়ে পরে বিস্তারিত লিখবো ইনশাআল্লাহ।
ইস্টার্ন ষ্টেট রেলওয়ের তত্বাবধানে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতবর্ষ বর্তমান বাংলাদেশের প্রথম রেল চালু হয় ১৮৭৮ সালে নাটোর - পার্বতীপুর রেললাইন স্থাপনের মধ্যে দিয়ে। ১৯০০ খৃঃ সান্তাহার - বোনারপাড়া রেললাইন চালু হলে তখন সান্তাহার একটি আধুনিক শহর হিসাবে যাত্রা শুরু করে। এই এলাকাটি ছিল খাদ্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত। রক্তদহ বিল তখন সুগভীর থাকায় জলপথে এ অঞ্চলটি সাড়া দেশের সাথে সংযুক্ত ছিল। তাই তৎকালীন সময়ে যোগাযোগের যে দুইটি প্রধান মাধ্যম ব্যবস্থা তা সান্তাহার বিদ্যমান থাকায় তাই এখানে অবিভক্ত পাকিস্তান সরকার সান্তাহারে সাইলো স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। দেশের দ্বিতীয় রেলওয়ে ট্রানশিপমেন্ট ইয়ার্ড সান্তাহার হওয়ায় বিষয়টি র গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। কারন তখন ব্রড গেজ এবং মিটারগেজ রেললাইনেরর শংমিশ্রনস্থল শুধু সান্তাহার ই ছিল। উপমহদেশের প্রখ্যাত এই জংশন ষ্টেশন টির উপর দিয়ে তখন কলকাতা, শিলিগুড়ি, শিয়ালদা এবং দার্জিলিং ট্রেন যাতায়াত করতো। তাই গুরুত্বের ভিত্তিতে ১৯৬৫ সালে এর মূল কাজ শুরু হলেও ভুমি অধিগ্রহণ শুরু হয় তার আগেই। এর মূল ভবনটির নির্মাণ দায়িত্ব পায় জার্মান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান " ক্যানেস্কা কনস্ট্রাকশন "। তাই এখনো এলাকার অনেক মানুষই এটাকে ক্যানেস্কা বলে। সেই সময় সাইলো নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল ১৫.৯৮ একর। এর নির্মাণ ব্যয় ছিল -৪০.৪০.০৬৫ মার্কিন ডলার যা তৎকালীন পাকিস্তানী রূপিতে এর পরিমান ছিল ১.৯২.৩০.৭০৮ রূপি। তখন ১ ডলার সমান পাকিস্তানী রূপি ছিল ৪.৭৬ রূপি। মূল নির্মাণের দায়িত্বে জার্মানরা থাকলেও এলাকার শ্রমিকদের ঘামেই এই সু উচ্চ আধুনিক ভবন তৈরী। রহিম বিহারীর মাটির কাজের ঠিকাদারী আর কাজিপুর গ্রামের ফরিদ উদ্দীন অফুরন্ত বাঁশ সরবরাহ এ নির্মাণ কাজকে তরান্বিত করেছিল। সম্পুর্ন রড, সিমেন্ট আর পাথরের ঢালাইয়ে নির্মিত এই ভবন তৈরী হতে সময় লেগেছিল প্রায় ৫ বছর। সুউচ্চ এই ভবনের মাটির নিচেও ২০ ফুট গভীর সংরক্ষনাগার আছে। এর ভিতরে যে গম সংরক্ষনের ব্যবস্থা তা সম্পুর্ন বিন পদ্ধতিতে। সংরক্ষিত অবস্থায় গমগুলি কখনোই বস্তাতে থাকেনা, কেবল বাইরে বের করার পর এগুলোকে বস্তাজাত করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সড়ক, রেল ও নৌ পথে আসা এই গম বিনের মধ্যে নেওয়া বা বাহির করা হয় বেল্টের মাধ্যমে।
  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

Leave your comment

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

hi nice